সামুদ্রিক সৌন্দর্যের স্বর্গরাজ্য মালদ্বীপ যেভাবে ভ্রমণ করবেন
আর্টিকেল সূচি
ভৌগলিক অবস্থান
মালদ্বীপ হল শ্রীলঙ্কা ও ভারতের দক্ষিণ পশ্চিম দিকে অবস্থিত ছোট একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। ২৯৮ বর্গকিলোমিটার ছোট এই দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে নিচু দেশ।সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মালদ্বীপের সর্বোচ্চ উচ্চতা মাত্র ২.৩ মিটার এবং গড় উচ্চতা মাত্র ১.৫ মিটার। মালদ্বীপ ১৯৬৫ সালের ২৬ শে জুলাই ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। মালদ্বীপের মোট প্রবাল দ্বীপের সংখ্যা এগারোশো ৯০ টি এরমধ্যে ২০০টি দ্বীপে মানুষ বসবাস করে।
আয়তন এবং জনসংখ্যা
মালদ্বীপের জনসংখ্যা বর্তমানে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫০০ জন। মালদ্বীপে প্রায় শতকরা ১০০ ভাগ লোকই মুসলমান। বর্তমানে মালদ্বীপে প্রায় দেড় লাখেরও বেশি বাংলাদেশি বসবাস করতেছে। পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম দেশের মধ্যে দশ নাম্বার স্থানে রয়েছে ভারত মহাসাগরে অবস্থিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালদ্বীপ।
রাজধানী
মালদ্বীপের রাজধানীর নাম মালে। খুব ছোট এই দ্বীপ শহরটিকে বলা হয় কিংস আইল্যান্ড। আপনি চাইলে পুরো এক ঘন্টা সময়ের মধ্যে মালে শহর ঘুরে আসতে পারবেন। সমুদ্রে জেগে থাকা এই দ্বীপ শহরটি পর্যটকদের কাছে খুবই প্রিয়। আয়তনে মাত্র ৫.৮ বর্গ কিলোমিটার দীর্ঘ এই দ্বীপে প্রায় ১ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ বসবাস করে। অবাক করা বিষয় হলো মালে গড়ে বিশ্বের অন্যতম জনবহুল শহর।
বিমানবন্দর
মালদ্বীপের একমাত্র বিমানবন্দরের নাম ইব্রাহিম নাসির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সমুদ্র ভাসে এই বিমানবন্দর। শুনতে অবাক হওয়ার মতো হলেও আস্ত একটা দ্বীপ নিয়ে গড়ে উঠেছে মালদ্বীপের এই বিমানবন্দর। এটি পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর বিমান বন্দর গুলোর মধ্যে একটি। এটি পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর বিমান বন্দর গুলোর মধ্যে একটি। এর চারপাশে বিস্তৃত রয়েছে ভারত মহাসাগর। মালদ্বীপের এই বিমানবন্দরটির অপরূপ দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করবে।
সৌন্দর্য
পৃথিবীর বুকে যতগুলো সুন্দর দেশ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম একটি দেশ হলো এই মালদ্বীপ। মালদ্বীপের প্রতিটি প্রবাল দ্বীপই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। এককথায় সমুদ্রের রানী হল মালদ্বীপ। এখানকার সমুদ্রের রং অতি পরিষ্কার পানির রং কোথাও স্বচ্ছ সবুজ জাত কোথাও নীলা ভাব বালির রং সাদা।
শিল্প সংস্কৃতি এবং অর্থনীতি
মালদ্বীপ খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে কে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গে সাথে যুক্ত। মালদ্বীপে দ্বাদশ শতাব্দীতে ইসলাম আসে এবং এটিই সালতানাত হিসেবে সংহত হয়। আর তারপরই এশিয়া ও আফ্রিকার সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।মালদ্বীপে বিভিন্ন সময়ে পর্তুগিজ ও ব্রিটিশরা কখনো পর্যটক, কখনো বাণিজ্যিক কুঠি স্থাপন, কখনো ব্রিটিশ সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের জন্য এখানে আসে। ব্রিটিশদের শাসনের পতনের পর হাজার ১৯৬৮ সালে প্রজাতন্ত্র মালদ্বীপ প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রাচীনকাল থেকেই সামুদ্রিক মাছ হচ্ছে দেশটির অর্থনীতির মূল ভিত্তি। কিন্তু বর্তমানে দেশটির সবথেকে বড় আয়ের এর উৎস হল পর্যটন শিল্প। । মালদ্বীপের মোট আয়ের ২৮ শতাংশ এবং মোট বৈদেশিক আয়ের ৬০ শতাংশই আসে পর্যটন শিল্প থেকে। মৎস্য শিকার হল মালদ্বীপের অনেক বড় একটি উৎস। এছাড়া স্থানীয় তৈরি হস্তশিল্প বিদেশে বিক্রি করা মালদ্বীপের অর্থনৈতিক আরেকটি খাত। গত এক দশক যাবত মালদ্বীপের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ঘরে ৭.৮ শতাংশের বেশি। এই দেশের মাথাপিছু আয় প্রায় ১৬ হাজার ৬৬৯ ডলার।
বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালে মালদ্বীপের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও চলতি ২০২১ সালে ১৩.৫ প্রকৃত জিডিপি অর্জন করতে চায় মালদ্বীপ।
জানা যায় প্রাচীনকালের মুদ্রার পরিবর্তে বিভিন্ন দেশে যে করি ব্যবহার করা হতো মালদ্বীপ তার বেশির ভাগেরই যোগান দিত। ভারতীয় উপমহাদেশ তো বটেই শুধু আফ্রিকা মহাদেশেও যেত মালদ্বীপের করি। এই কারণে মালদ্বীপকে দ্বিতীয় শতকে মানি আইল্যান্ড নামে ডাকা হতো।
আরো পড়ুন
ট্রাভেলারদের পছন্দের দেশ মালদ্বীপ
মালদ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যে কোন মানুষকে বিস্মিত করবে। ভ্রমণের জন্য রোমান্টিক পর্যটন স্পট হিসেবে মালদ্বীপ পর্যটকদের আকর্ষণ করে। বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ পর্যটনবান্ধব দেশ হিসেবে মালদ্বীপের পরিচিতি রয়েছে। মালদ্বীপে গেলে বেশিরভাগ পর্যটকরাই দেশটির রাজধানী মালে তো জান। সেখান থেকেই ভ্রমণের শুরু করে এবং পর্যটন স্পটে যায়। মালদ্বীপে গেলে আপনি স্পেশ্যাল রিসোর্ট পোল ভোটিং এক্সপ্রেস সবই পাবেন নিজের মত করে। বিশেষ করে হানিমুন জুটিদের অন্যতম পছন্দের স্পট হবে এই মালদ্বীপ। কারণ এখানে নতুন লোকাল গেস্ট হাউজ গুলো হানিমুন জুটির জন্য নিয়ে এসেছে ফ্লোটিং হাউস অ্যাডভেঞ্চার সহ মনমুগ্ধকর নানা আয়োজন।
মালদ্বীপে পাবেন সমুদ্রে ঘুরে বেড়ানোর জন্য সেইফ প্লেন। মালদ্বীপে রয়েছে অনেক সুন্দর সুন্দর মনমুগ্ধকর বিলাসবহুল রিসোর্ট। এমনকি সাগরের তলে রয়েছে রিসোর্ট।
মালদ্বীপের বাঙালি দ্বীপে রয়েছে দোতলা একটি রিসোর্ট। সাগরের 16 ফুট পানির নিচে এই রিসোর্টের নাম মুরাদ। এই রিসোর্টের বিছানার পাশাপাশি অন্যান্য রিসোর্ট এর মত সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এই রিসোর্টের সবথেকে আকর্ষণীয় দিক হলো এখানে শুয়ে সাগরের নিচের অতুলনীয় দৃশ্য উপভোগ করা যায়। এই রিসোর্টের থাকতে হলে রাত পতি খরচ করতে হবে 42 লাখ টাকা।
বাংলাদেশ থেকে যেভাবে ভ্রমণ করবেন মালদ্বীপে
ভ্রমণপিপাসুদের অন্যতম প্রিয় দেশ হল মালদ্বীপ। এইচডি প্রস্তুতিতে এখন বিদেশীরা খুব সহজেই ভ্রমণ করতে পারে। এই দেশে ভ্রমণ করতে হলে আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ কমপক্ষে ছয় মাস থাকতে হবে। দেশটিতে যেতে হলে আগে থেকে ভিসা করার কোন প্রয়োজন নেই। আপনার কাগজপত্র ঠিক থাকলে মালদ্বীপ এয়ারপোর্টে আসার পর অন এ্যারাইভাল’ ভিসা পাবেন। এজন্য আপনার লাগবে বিমানের রিটার্ন টিকেট হোটেল বুকিং পর্যাপ্ত ডলার চাকরি বা ব্যবসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র।
বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপ ভ্রমণের খরচ
ফ্লাইটে ঢাকা থেকে মালদ্বীপ যেতে খরচ হবে ৪৩,০০০-৬০,০০০ টাকা।
মালদ্বীপের কয়েকটি বাজট ফ্রেন্ডলি রিসোর্ট
Hotel Unima Grand
হোটেল উনিমা গ্র্যান্ড হল মালদ্বীপের একটি বাজেট ফ্রেন্ডলি রিসোর্ট।এখানে থাকতে হলে প্রতি রাতের জন্য আপনাকে গুনতে হবে বাংলাদেশি টাকায় 7700 টাকা। কম বাজেটের হলেও এখানে আপনি প্রিমিয়াম কোয়ালিটি সুবিধা পাচ্ছেন।
- Free airport shuttle
- Free WiFi
- Air conditioning
- Laundry
- Restaurant
- Business services
- Room service
- Housekeeping
- 24/7 front desk
- Free WiFi
- Air conditioning
- Laundry
- Restaurant
- Breakfast available
- Business services
- Housekeeping
- 24/7 front desk
Hotel Octave
বাজেটের মধ্যে হোটেল অক্টেভ হতে পারে আপনার পছন্দের চয়েজ।হোটেল অক্টেভ এ এক রাত থাকতে হলে খরচ হবে বাংলাদেশী টাকায় নয় হাজার টাকা। সুবিধা সমূহ
- Free WiFi
- Laundry
- Restaurant
- Business services
- Room service
- Housekeeping
- 24/7 front desk
প্রিয় পাঠক ও পাঠিকাগণ আর্টিকেলটি কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন
টেক রিলেটেড প্রেমিয়াম রিসোর্স ফ্রিতে পেতে যুক্ত হন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে
টেক দুনিয়ার সর্বশেষ খবরা-খবর জানতে যুক্তহন আমাদের ফেসবুক গ্রুপে