আসসালামু আলাইকুম।
শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যিনি পরম করুনাময় এবং অত্যন্ত দয়ালু।
পোশাক হল আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। পোশাক মানুষের মৌলিক চাহিদা গুলোর মধ্যে একটি। ধনী থেকে গরিব প্রতিটি মানুষেরই পোশাকের প্রয়োজন হয়। বিশ্বের অর্থনীতিতে পোশাকশিল্প হল একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত।
বিডি টেক ডায়েরি ডটকমের পক্ষ থেকে আমি সাদ আজকে আলোচনা করব বিশ্বের দশটি তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ নিয়ে।
তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ দশ দেশ ২০২৩
দেশ | অবস্থান | রপ্তানি মূল্য (বিলিয়ন ডলারে) |
চায়না | ১ | ১১৮.৫ |
জার্মানি | ২ | ৪০ |
বাংলাদেশ | ৩ | ৩৮.৭৩ |
ভিয়েতনাম | ৪ | ৩৮ |
ইন্ডিয়া | ৫ | ৩৭.১১ |
ইতালি | ৬ | ৩৬.৫ |
তুরস্ক | ৭ | ২৯ |
আমেরিকা | ৮ | ২৭.১৪ |
হংকং | ৯ | ২০.৪৩ |
Source: fashinza.com
চায়না
চীন ১৯৯২ সাল থেকে বিশ্বের সবথেকে বৃহত্তম পোশাক প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানিকারী দেশ। বিশ্বের মোট পোশাক উৎপাদনের ৫২.২ শতাংশই উৎপাদন করে থাকে চীন এবং আয় করে থাকে ১১৮.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
চীন সবথেকে মানসম্মত কাঁচামাল এবং তৈরি পোশাক উৎপাদন করে থাকে। স্বল্প ব্যয়ে পোশাক উৎপাদন, আধুনিক ও উচ্চ প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি ব্যবহার, উন্নত শিল্প কাঠামো, দেশীয় এবং বৈশ্বিক বাজারে কাজের অগ্রগতি চীনকে শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে।
চীন সব সময়ই তাদের উৎপাদনে সর্বাধিক উন্নত প্রযুক্তি এবং বিশাল শ্রমশক্তির ব্যবহার করে থাকে। এই কারণেই তারা বিশ্বের মোট পোশাক উৎপাদনে ৫২% উৎপাদন করতে সক্ষম হয়। এবং ভবিষ্যতে তারা আরও বেশি মার্কেট শেয়ার অর্জন করতে সক্ষম হবে।
জার্মানি
জার্মানির নাম দেখে আপনি অবাক হতে পারেন। বর্তমানে জার্মানি তৈরি পোশাক রপ্তানি বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয়। জার্মানির বার্ষিক রপ্তানি মূল্য প্রায় ৪০ মিলিয়ন ডলার।
তবে এটি আগের মত ছিল না। সম্প্রতি জার্মানি তাদের মাইন্ড সেটআপ কে অনেক পরিবর্তন করেছে। অতীতে জার্মানির মূল ফোকাস ছিল যতটা সম্ভব কম দামের মধ্যে বেশি পণ্য উৎপাদন করা। কিন্তু বর্তমানে জার্মানির মূল ফোকাস হচ্ছে উচ্চ মানের পণ্য উৎপাদন করা।
বর্তমানে জার্মানি তাদের পোশাক শিল্পে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। সুদূর ভবিষ্যতে জার্মানির পোশাকশিল্পে নেতৃত্ব দেওয়ার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ
পোশাক রপ্তানিকারক দেশ গুলোর মধ্যে বাংলাদেশ হলো একটি শীর্ষস্থানীয় দেশ। ২০১৮ সালেও বাংলাদেশ ছিল তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় দেশ। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে। বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি মূল্যে ৩৮.৭৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের এত উপরের দিকে অবস্থানে থাকার মূল কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের মজুরি অনেক কম এবং বাংলাদেশের বিশাল কর্মশক্তি আছে। বিশ্বব্যাপী বড় বড় ব্রান্ডের মূল্য সংযোজন এবং পোশাক আইটেম গুলির বাল্ক অর্ডার নিয়ে বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্প দ্রুত বাড়ছে।
বাংলাদেশের পোশাক খাতে প্রায় দুই কোটির বেশি মানুষ কাজ করে থাকে। যারা সর্বনিম্ন মূল্য সেরা মানের গার্মেন্টস পণ্য আমদানি করতে চায় তাদের জন্য বাংলাদেশ হল প্রথম পছন্দ।
ভিয়েতনাম
বিশ্বজুড়ে পোশাক উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে ভিয়েতনাম চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। ভিয়েতনামের রপ্তানি মূল্য প্রায় ৩৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। ভিয়েতনামে অগ্রগতির অন্যতম কারন হলো তাদের স্বল্প শ্রমব্যায়, আধুনিক মানের পণ্য উৎপাদন এবং বিশেষায়িতকরণ।
তাদের মূল ফোকাস হলো উচ্চ মানের প্রোডাক্ট সরবরাহ এবং এই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে প্রতিযোগিতা করার জন্য আধুনিক মানের পণ্য উৎপাদন করা।
- ব্লগিং ওয়েবসাইট এর জন্য ওয়ার্ডপ্রেসের সেরা কিছু থিম
- সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং শিখুন বাংলায়
ইন্ডিয়া
ভারতের টেক্সটাইল এবং পোশাক শিল্প বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম উৎপাদক এবং রপ্তানি কারক। ভারতের পোশাক শিল্প সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত, এর প্রথমটি হলো অসংগঠিত খাত যার মধ্যে সেরিকালচার এবং হস্তশিল্প অন্তর্ভুক্ত। দ্বিতীয়টি হলো সংগঠিত যা আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং কৌশল গুলি যেমন স্কেলের অর্থনীতিতে প্রয়োগ করে।
ভারতের রপ্তানি বাজার মূল্য প্রায় ৩৭.১১ মার্কিন বিলিয়ন ডলার। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভারত বিশ্বের মধ্যে পঞ্চম অবস্থানে আছে। টেকস্টাইল পণ্য উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের ভারত উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।
ইতালি
বিশ্বের বিশিষ্ট একটি পোশাক শিল্প হল ইতালিয়ান পোশাক শিল্প।তুলা লিলেন এবং উল উৎপাদনের জন্য ইতালির বিশ্বে বিশেষ সুনাম রয়েছে।বর্তমানে ইতালির পোশাক রপ্তানির বাজারমূল্য প্রায় ৩৭.৫৭ বিলিয়ন ডলার। ইতালির আছে উন্নত প্রযুক্তি এবং শক্তিশালী শিল্প কাঠামো।
তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ দশ দেশ ২০২৩
তুরস্ক
উচ্চ মানের পণ্য উৎপাদন করার জন্য বিশ্বজুড়ে তুরস্কের অনেক সুনাম রয়েছে। তুরস্কের পোশাক রপ্তানি শিল্পের রপ্তানি মূল্য বর্তমানে প্রায় ২৯ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
তুরস্কের সবথেকে বড় স্পেশালিটি হল তাদের আশ্চর্যজনক নকশা করার ক্ষমতা। তুরস্কের কাছে রয়েছে উন্নত সব প্রযুক্তি। বর্তমানে তুরস্ক অন্যান্য দেশগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে বিশ্বমানের প্রোডাক্ট তৈরি করে রপ্তানি করা যাচ্ছে।
আমেরিকা
গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী অষ্টম অবস্থানে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক শ্রমিকরা অন্যান্য দেশগুলোর পোশাকশ্রমিকদের থেকে সবথেকে বেশি বেতন বা মজুরি পেয়ে থাকে। এই কারণে তাদের পণ্য অনেক ব্যয়বহুল তবে তাদের পণ্যগুলোর গুণগতমান শীর্ষ স্থানীয়।
আপনি যদি খুব উচ্চ মানের এবং উচ্চ কোয়ালিটির পণ্য ইমপোর্ট করতে চান তাহলে আমেরিকাকে বেছে নিতে পারেন।
হংকং
হংকং সুতি স্পিনিং ডেনিম ওয়েভিং পাইন গাছ সুতি বোনা রপ্তানির জন্য খুব সুপরিচিত। হামকো 993 সাল পর্যন্ত সেরা এবং বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ ছিল। এখন তারা পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বের মধ্যে নবম স্থানে অবস্থান করছে।
বাংলাদেশের বাজারে সেরা স্মার্ট ফোন ব্রান্ড ২০২২
স্পেন
স্পেন হলো বিশ্বের অন্যতম টেক্সটাইল এবং টেক্সটাইল মেশিন উৎপাদনকারী কান্ট্রির মধ্যে একটি। স্পেন বর্তমানে গার্মেন্টস সামগ্রী এবং গার্মেন্টস মেশিন উৎপাদন কারী দেশগুলোর মধ্যে দশম অবস্থানে স্থান করছে। স্পেনের রপ্তানি মূল্য প্রায় 20 মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। দিনে দিনে তারা তাদের পণ্যের গুণগত মান এবং পরিমাণকে শীর্ষ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
প্রিয় পাঠক ও পাঠিকাগণ কেমন লেগেছে আজকের আর্টিকেলটি অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন
প্রিমিয়াম কোর্স এবং টুলস ফ্রী পেতে যুক্তহন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে