নতুন ড্রাইভার হিসেবে আপনার যা করনীয়

আপনি যদি গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে নতুন হয়ে থাকেন তাহলে প্রথমবার গাড়ি চালানোর সময় রাস্তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই ড্রাইভিং টিপসগুলি অনুসরণ করতে পারেন৷

১. আপনার গাড়ি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

আপনি রাস্তায় গাড়ি বের করার আগে আপনার গাড়ির বেসিক লেআউটের সাথে পরিচিত হওয়া উচিত অত্যন্ত জরুরী। যদিও কেউ এটি একদিনে শিখে না, তবুও আপনার গাড়ির সম্পর্কে অন্তত তাত্ত্বিক জ্ঞান থাকা উচিত।
যেমন মৌলিক বিষয়গুলো জানাঃ স্টিয়ারিং হুইল এবং ড্যাশবোর্ডের বোতামগুলি কীভাবে ব্যবহার করবেন, কীভাবে জ্যাক রাখবেন, জ্বালানী ট্যাঙ্কের ক্ষমতা – এইগুলি এমন কিছু জিনিস যা প্রতিটি ড্রাইভারের জানা উচিত।

এছারা আপনার গাড়ির ক্যাটাগরি অনুযায়ী ড্রাইভ করার জন্য আপনার মনও সেট করা উচিত; হ্যাচব্যাক, সেডান বা এসইউভি, যেহেতু প্রতিটি ক্লাসের সাথে কিছু বিশেষত্ব জড়িত। উদাহরণস্বরূপ, কিছু লোক গাড়ি পার্ক করা বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করে। গাড়ি চালানোর সময় কোনো আতঙ্ক এড়াতে আপনার গাড়ি সম্পর্কে সচেতন হওয়া উচিত।

driving rules Bangladesh

২. সিট বেল্ট পরুন –

গাড়ি চালানোর সময় সমস্ত গাড়ির চালকদের অবশ্যই তাদের সিট বেল্ট পরতে হবে। আপনি একজন শিক্ষানবিস বা পেশাদারই হোন না কেন, গাড়ি চালানোর সময় আপনার সিট বেল্ট পরার অভ্যাস অনুসরণ করা উচিত।

শুধু বাধ্যতামূলকই নয়, দুর্ঘটনা বা সংঘর্ষের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে সিট বেল্ট পরা একটি কার্যকর উপায়।

ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ ২০২২

৩. ড্রাইভিং করার আগে প্রয়োজনীয় টুলস এডজাস্টমেন্ট –

আপনি ড্রাইভিং করার আগে আপনার সিট, লুকিং গ্লাস এবং স্টিয়ারিং হুইল প্রয়োজন মত এডজাস্ট করতে ভুলবেন না। আপনি ড্রাইভ করার পূর্বে এই ধরনের এডজাস্টমেন্ট সম্পর্কে অন্যান্য ড্রাভারদের দেখে শিখে নিতে পারেন, অবশ্যই নতুন ড্রাইভার হিসাবে, আপনার সাচ্ছন্দ এবং নিরাপদ ড্রাইভ নিশ্চিত করতে আগে থেকেই এই সমন্বয়গুলি নির্ভূল্ভাবে শিখে নেয়া খুবই জরুরী।

৪.আপনার উভয় হাত স্টিয়ারিং হুইলে রাখুন –

একজন শিক্ষানবিশ হিসাবে, আপনার এক হাতে ড্রাইভিং করা মোটেও উচিত নয়। আপনাকে অবশ্যি উভয় হাত স্টিয়ারিং হুইলে রেখে গাড়ি নিয়ন্ত্রণে করা প্রয়োজন। স্টিয়ারিং হুইলের সঠিক পজিশন জানার জন্য আপনি অভিজ্ঞ ড্রাইভারের পরামর্শ নিতে পারেন। যা খুবই গুরুত্বপূর্ন। সেই সাথে স্টিয়ারিং হুইল ধরে রাখার যাবতিয় কৌশলগুলিও শিখে নিতে পারেন , যেন নতুন ড্রাইভার হিসেবে আপনার সড়ক দূর্ঘটনার আশংকা কমে যায়।

৫. মাঝারি গতি বজায় রাখুন –

একজন শিক্ষানবিশ ড্রাইভার হিসাবে, আপনার সর্বদা মাঝারি বা ধীর গতি বজায় রাখা উচিত। যদিও উচ্চ গতির ড্রাইভ মনে প্রশান্তি এনে দেয়, তবুও মনে রাখবেন যে আপনি শুরুতে উচ্চ গতিতে একটি গাড়ি পরিচালনা করতে পারবেন না। আপনার গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে অসুবিধা হতে পারে যদি আপনার গাড়ির সামনে কোনো বস্তু বা ব্যক্তি তাৎক্ষণিকভাবে উপস্থিত হয়, যা দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে।

৬. সিগন্যাল ইন্ডিকেটর ব্যবহার করুন –

গাড়ির ইন্ডিকেটরগুলি আপনাকে ড্রাইভ করার সময় অন্যান্য ড্রাইভারের সাথে যোগাযোগ করতে সহায়তা করে। লেন পরিবর্তন করার আগে, অন্য যানবাহনের পাশ দিয়ে যাওয়া এবং প্রধান রাস্তায় থামার আগে টার্ন ইন্ডিকেটর ব্যবহার করার অভ্যাস করুন। এটি অন্যান্য গাড়ির চালকদের তাদের গতি সামঞ্জস্য করার জন্য সতর্ক করে এবং আপনাকে নিরাপদে টার্ন নিতে সাহায্য করে।

৭. ফোনে ব্যাস্তথাকা এড়িয়ে চলুন –

গাড়ি চালানোর সময় আপনার ফোন ব্যবহার করা বা অন্য কোনো কার্যকলাপে মনোযোগ দেওয়া এড়িয়ে চলা উচিত। গাড়ি ড্রাইভ করা অবস্থায় মোবাইল ফোন ব্যবহার ইতিমধ্যেই সড়ক দুর্ঘটনার একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। গাড়ি চালানোর সময় যদি আপনাকে একটি ফোন কল নিতে হয়, তবে আপনার গাড়িটি উপযুক্ত স্থানে পার্ক করুন এবং তারপর কথা বলুন। এছাড়াও, গাড়ি চালানোর সময় ইয়ারফোন ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। এতেও দুর্ঘটনার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।

৮. আত্মবিশ্বাসী এবং শান্ত হোন –

নতুন ড্রাইভ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ড্রাইভিং টিপস হলো গাড়ি চালানোর সময় আত্মবিশ্বাসী এবং শান্ত থাকা। একজন শিক্ষানবিস হিসাবে গাড়ি চালানোর সময় কিছুটা নার্ভাস হওয়া স্বাভাবিক, তবে এটি রাস্তায় চলাকালীন আপনার মনোবলকে যেন প্রভাবিত না করে। আতঙ্কিত মনোভাব নিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করা রাস্তায় চলাচলরত অন্য পথযাত্রীদের জন্য খুবই বিপদজনক। আপনি আপনার ড্রাইভিং দক্ষতা সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী হলে ধীরে ধীরে ভ্রমণের দূরত্ব বাড়াতে পারেন। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি কম থাকে।

৯. আপনার লাইসেন্স এবং বীমা নথি বহন করুন –

একটি গাড়ি চালানোর সময়, আপনাকে সর্বদা আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং অন্যান্য গাড়ি-সম্পর্কিত কাগজপত্র যেমন রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, টাক্স টোকেন সঙ্গে রাখতে হবে। এই কাগজপত্র ছাড়া ধরা পড়লে, আপনার আইন অনুযায়ী শাস্তি অথবা জরিমানা হতে পারে। কেউ কখনও এই ধরনের ভুলের জন্য শাস্তি পেতে চায় না, অন্তত তাদের ড্রাইভিং অভিজ্ঞতার শুরুতে।

১০. বিরক্তি মেজাজ নিয়ে কখনই গাড়ি চালাবেন না –

একজন শিক্ষানবিশ হিসাবে, ট্রাফিক এবং রাস্তার সাথে অভ্যস্ত হওয়ার জন্য আপনার অতিরিক্ত ফোকাস প্রয়োজন। গাড়ি চালানোর সময়, স্প্লিট-সেকেন্ডের সিদ্ধান্তগুলি হয় আপনাকে নিরাপদ রাখতে পারে আবার আপনার জীবনকে বিপদেঅও ফেলতে পারে। স্ট্রেস আপনাকে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতে পারে এবং আপনার একাগ্রতা এবং বিচার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে,।আপনাকে ভুল ধারণা এবং দুর্ঘটনার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। সুতরাং, চাপের মধ্যে থাকলে বা যখন আপনি বিরক্ত মেজাজে থাকেন তখন গাড়ি চালানোর মত অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথা থেকে ঝেরে ফেলুন।

post creadit : #DoctorAuto