আসসালামুয়ালাইকুম!
শুরু করছি মহান আল্লাহর নামে যিনি পরম করুণাময় এবং অত্যন্ত দয়ালু
আজকের আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে ব্যাংক এশিয়ার স্বাধীন মাস্টার কার্ডের বিস্তারিত জানাবো এবং নিজের ব্যবহারের অভিজ্ঞতা বলবো।
ফ্রিল্যান্সারদের সুবিধা অসুবিধার কথা মাথায় রেখে ২০১৮ সালে ব্যাংক এশিয়া লাঞ্চ করেছিল স্বাধীন নামক মাস্টারকার্ড, এই উদ্যোগে ব্যাংক এশিয়াকে সাহায্য করেছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। এটি হলো একটি ডুয়েল কারেন্সি মাস্টারকার্ড। বাংলাদেশী টাকা এবং আমেরিকান ডলার সমর্থনকারী এই মাস্টারকার্ডটি ব্যাংক এশিয়ার যেকোনো ব্রাঞ্চ থেকে আপনি নিতে পারবেন।
আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাদেরকে ব্যাংক এশিয়ার স্বাধীন মাস্টারকার্ড এর সম্পর্কে এ টু জেড বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব। কীভাবে এই কার্ডটি পাবেন কার্ডটি পেতে হলে কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন এবং সুবিধা এবং অসুবিধা।
আর্টিকেল সূচি
স্বাধীন মাস্টারকার্ড পেতে জে জে ডকুমেন্ট প্রয়োজন
দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
জাতীয় পরিচয় পত্রের দুই কপি ফটোকপি।
ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি (গ্যাস, পানি,বিদ্যুৎ)।
পাসপোর্ট (ডলার ব্যবহারের জন্য)
বার্ষিক ৫০০ টাকা সাথে ৭৫ টাকা ভ্যাট।
এ সকল ডকুমেন্ট নিয়ে ব্যাংক এশিয়ার কাছের কোন ব্রাঞ্চে চলে যান।
কার্ড পাওয়ার প্রক্রিয়া
সকল ডকুমেন্ট নিয়ে ব্যাংকে যাওয়ার পরে কার্ড ডিভিশন এর কোন অফিসারের সাথে যোগাযোগ করুন। তারপরে অফিসার আপনাকে একটি ফরম পূরণ করতে দিবে। ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করার পরে অফিসারের কাছে কার্ডটির চার্জ ৫৭৫ টাকা জমা দিবেন।
কার্ডটি তৈরী হয়ে ব্রাঞ্চে আসতে প্রায় ৭ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে। ব্রাঞ্চে চলে আসার পরেই ব্রাঞ্চ থেকে আপনাকে কল করে অথবা এসএমএস করে জানিয়ে দেয়া হবে। আপনি চাইলে কার্ডি হোম ডেলিভারিও নিতে পারেন।
কার্ড অ্যাক্টিভেশন
ব্যাংক থেকে কার্ডটি বুঝে পাওয়ার পরে অবশ্যই আপনাকে কার্ডটি একটিভ করতে হবে। কার্ডটি একটিভ করার জন্য ব্যাংক এশিয়ার কার্ড ডিভিশনে আপনাকে একটি মেইল পাঠাতে হবে। মেইলটি আপনাকে একটি সাদা কাগজের উপরে লিখতে হবে তারপরে সেটির ছবি তুলে পাঠাতে হবে। নিচের কাগজটি দেখুন
কার্ড ডিভিশন এর মেইল এড্রেস : [email protected]
আরো পড়ুন
ইবিএল মাস্টার কার্ডের সুবিধা-অসুবিধা বিস্তারিত (সেরা প্রিপেইড কার্ড)
কিছু কমন প্রশ্ন এবং উত্তর
এই কার্ডে কি ফ্রিল্যান্সিং করে উপার্জন করা অর্থ আনা যাবে?
হ্যাঁ, এই কার্ডে আপনি ফ্রিল্যান্সিং এর অর্থ আনতে পারবেন। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে সরাসরি এই কার্ডে ডলার আনতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে একটা কন্ডিশন আছে এই কার্ডে আনা অর্থের ৩০% শুধু আপনি বাংলাদেশি টাকায় খরচ করতে পারবেন অথবা তুলতে পারবেন। বাকি ৭০% অর্থ আপনি ফরেন পার্টে খরচ করতে পারবেন
ব্যাংক থেকে কি এই কার্ডে ডলার রিচার্জ করা যাবে?
না, ব্যাংক থেকে এই কার্ডে ডলার রিচার্জ করা যাবে না। তবে প্রথমবার কার্ড নেওয়ার সময় আপনি সর্বোচ্চ ৫ ডলার এন্ডোর্সমেন্ট করতে পারবেন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে কার্ড ভেরিফিকেশন করার জন্য।
এটি কি সব ধরনের এটিএম বুথে সমর্থন করে?
হ্যাঁ, এটি সব ধরনের মাস্টারকার্ড লোগো সম্মিলিত এটিএম বুথে সাপোর্ট করে। মাস্টার কার্ড লোগো সম্বলিত যেকোনো এটিএম বুথ থেকে আপনি আপনার অর্জিত অর্থের ৩০ শতাংশ টাকা উইথড্র করতে পারবেন।
এটি দিয়ে কি পজ মেশিন এর পেমেন্ট করা যাবে?
হ্যাঁ, এটি দিয়ে পজ মেশিনে দেশে এবং দেশের বাইরে পেমেন্ট করা যাবে।
কার্ডের ব্যালেন্স কিভাবে চেক করব?
কার্ডের ব্যালেন্স চেক করতে হলে আপনাকে ব্যাংক এশিয়ার কল সেন্টারে ফোন করতে হবে। ফোন করার পর কাস্টমার ম্যানেজার আপনাকে কয়েকটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবে আপনি উত্তর দিতে পারলে আপনাকে ব্যালেন্স জানিয়ে দিবে।
তাছাড়াও ব্যাংক এশিয়ার অ্যাপসের মাধ্যমে আপনি ব্যালেন্স জানতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে ব্যাংক থেকে ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করতে হবে।
স্বাধীন মাস্টার কার্ডের বিশেষ কিছু সুবিধা।
স্বাধীন মাস্টারকার্ড হলো বাংলাদেশের একমাত্র মাস্টারকার্ড যে কার্ড দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করে উপার্জিত অর্থ দেশে আনা যায়। বাংলাদেশের অন্য কোন ব্যাংকের কার্ডে এই সুবিধা পাওয়া যায় না।
মাস্টার কার্ড লোগো সম্বলিত যেকোনো এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করা যায়।
দেশি-বিদেশি যেকোনো ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে কেনাকাটা করা যায়।
কার্ড হোল্ডারদের জন্য ব্যাংক থেকে রয়েছে বিশেষ ইন্সুরেন্স সুবিধা। বিদেশ থেকে রেমিটেন্স আসার তিন মাসের মধ্যে যদি আপনার মৃত্যু হয় তাহলে আপনার বেনিফিশিয়ারি ৫০ হাজার টাকা পাবে।
ইন্টারনেট ব্যাংকিং সুবিধা।
কার্ড আপনি চাইলে পেওনিয়ারের সাথে সংযুক্ত করতে পারবেন। এবং পেওনিয়ার থেকে ডলার আনতে পারবেন।
টু ফ্যাক্টর সিকিউরিটি সুবিধা।
প্রতি লেনদেনের ফ্রী এসএমএস এলার্ট।
স্মার্ট অ্যাপ ব্যবহার করে ব্যালেন্স জানতে পারবেন।
২৪ ঘন্টা কল সেন্টার সুবিধা।
স্বাধীন মাস্টার কার্ডের কিছু অসুবিধা।
স্বাধীন মাস্টার কার্ডের অন্যতম অসুবিধা হলো ব্যাংক থেকে এই কার্ডে ডলার রিচার্জ করতে পারবেন না।
ফ্রিল্যান্সিং থেকে অর্জিত অর্থের শুধু ৩০ শতাংশই আপনি বাংলাদেশি টাকায় খরচ করতে পারবেন কিংবা উত্তোলন করতে পারবেন। বাকি ৭০ শতাংশ অর্থ আপনাকে ফরেন পার্টে খরচ করতে হবে।
এটিএম থেকে উত্তোলন চার্জ ট্রানজেকশন প্রতি ৩% কাটবে। যা আমার কাছে একটু বেশিই মনে হয়েছে।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের কিছু সতর্কতা।
কার্ডের ইনফর্মেশন কখনো কাউকে শেয়ার করবেন না।
সব সময় ট্রাস্টেড ওয়েবসাইটে লেনদেন করবেন।
কার্ডটি হারিয়ে গেলে অবশ্যই কল সেন্টারে কল করে কাট লক করে দিবেন।
যে কোন তথ্য জানতে অথবা প্রয়োজনে কল করুন ব্যাংক এশিয়ার কল সেন্টারে।
২৪ ঘন্টা সার্ভিস।
16205
09617016205
আর্টিকেলটি কেমন লেগেছে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না