হ্যালো বন্ধুরা,
আসসালামু আলাইকুম!

দিন যতো যাচ্ছে আমাদের দেশে অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। বাড়ছে বার্ষিক জিডিপির হার।
এবং সেই সাথে আমাদের ব্যাংকিং লেনদেন এবং আমাদের ব্যাংকিং চাহিদা বেড়েই চলেছে। ব্যাংকিং লেনদেনের চাহিদা ছড়িয়ে পড়েছে শহর থেকে গ্রামে। আর সকল ধরনের মানুষের ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করা এবং সকল ধরনের ব্যাংকিং সুযোগ-সুবিধা প্রদানের জন্য। বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি ব্যাংক ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড চালু করেছে তাদের এজেন্ট ব্যাংকিং সুবিধা।

আর্টিকেল সূচি

ডাচ বাংলা ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং একাউন্ট 

ডাচ বাংলা ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং হলো বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত একটি নতুন ব্যাংকিং ব্যবস্থা।এই ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতিটি লেনদেন বায়োমেট্রিক মেশিন ব্যবহার করে গ্রাহকের আঙ্গুলের ছাপ শনাক্তকরণের মাধ্যমে পরিচালনা হয়ে থাকে।
এজেন্ট ব্যাংকিং এর কার্যক্রম সহজ করার জন্য একটি আলাদা এজেন্ট ব্যাংকিং বিভাগ তৈরি করা হয়েছে। বিভাগটি বায়োমেট্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে গ্রাহকদের সেবা প্রদান করে যাচ্ছে।

এজেন্ট ব্যাংকিং একাউন্ট খোলার জন্য যা যা প্রয়োজন

আপনি সর্বনিম্ন ১০ টাকা দিয়ে একটি ডাচ বাংলা ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং একাউন্ট খুলতে পারবেন। একাউন্ট খোলার জন্য সদস্যের ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং নমিনি ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি এবং ভোটার আইডি কার্ডের ১টি ফটোকপি নিয়ে নির্দিষ্ট এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটে যেতে হবে। তারপর এজেন্টের কাছ থেকে একাউন্ট খোলার ফরম নিয়ে সঠিকভাবে পূরণ করে দিতে হবে। এজেন্ট ফরমটি যাচাই-বাছাই করার পরে বায়োমেট্রিক মেশিনে লগইন করে গ্রাহকের জাতীয় পরিচয় পত্র বা অন্য কোন ডকুমেন্ট এর নাম্বার প্রদান করবেন এবং বায়োমেট্রিক মেশিনে আঙ্গুলের ছাপ নিবেন। পরবর্তীতে ব্যাংক কর্মকর্তারা গ্রাহকের কাগজের সত্যতা যাচাই পূর্বক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভ করবে। সাধারণত অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভ হওয়ার জন্য ১-২ কর্মদিবস লাগতে পারে।

ডাচ বাংলা ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবিধা সমূহ

নগদ সংগ্রহ এবং নগদ উত্তোলন
স্টুডেন্ট ব্যাংকিং সুবিধা
এটিএম বুথ থেকে উত্তোলন
এক বছরের জন্য এটিএম কার্ডের চার্জ ফ্রি
ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ এবং ঋণের কিস্তি রিকভারি
ইউটিলিটি বিল পরিশোধের সুবিধা
ফিক্স ডিপোজিট করার সুবিধা
ডিপিএস করার সুবিধা
নগদ সংগ্রহের মাধ্যমে মুনাফা অর্জন
একাউন্ট মেইনটেন এর জন্য বার্ষিক কোন চার্জ নেই
বিদেশ থেকে রেমিটেন্স আনয়ন
বীমা করার সুবিধা
এক একাউন্ট থেকে অন্যে একাউন্টে টাকা আদানপ্রদান
মার্চেন্ট পেমেন্ট এর সুবিধা
ব্যালেন্স অনুসন্ধান এবং স্টেটমেন্ট
অর্থ স্থানান্তর

এছাড়াও আপনি এজেন্ট ব্যাংকিং একাউন্ট খোলার সঙ্গে সঙ্গেই টাকা জমা রাখতে পারবেন। একাউন্টি ভেরিফাই হওয়ার পর আপনি আপনার টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।

ডাচ বাংলা ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং এর লেনদেনের সীমা

দৈনিক জমা এবং উত্তোলন 
চলতি হিসাব: চলতি হিসাবের একাউন্টে আপনি প্রতিদিন সর্বোচ্চ চারবার করে 6 লক্ষ টাকা জমা দিতে পারবেন। এবং আপনি প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই বার এ  ৫ লক্ষ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
সঞ্চয়ী হিসাব: সঞ্চয়ী হিসাবের একাউন্টে আপনি প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুইবার করে চার লক্ষ টাকা জমা দিতে পারবেন। এবং আপনি প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই বার এ তিন লক্ষ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।

একাউন্টে জমাকৃত টাকার উপরে গ্রাহক ব্যাংক একাউন্ট নির্ধারিত ষাম্মাসিক হিসেবে মুনাফা পাবেন। বর্তমানে যা শতকরা ৩ ভাগ হারে নির্ধারণ করা হয়েছে।

যেভাবে এটিএম কার্ড পাবেন

আপনার অ্যাকাউন্টটি অনুমোদন হওয়ার পরে আপনি যেকোন ডাচ বাংলা ব্যাংক ফাস্ট ট্র্যাক ও জেলা শহরের সংশ্লিষ্ট এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা থেকে এটিএম কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে তার আগে আপনার এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা থেকে এজেন্টের কাছ থেকে এটিএম কার্ড উত্তোলনের জন্য একটি স্লিপ নিতে হবে। এবং আপনি কোন শাখা বা ফাস্ট ট্রাক থেকে কার্ড নিতে চান সেটি বলতে হবে।

এটিএম কার্ডের চার্জ

এটিএম কার্ডের জন্য প্রথম বছর আপনাকে কোন চার্জ দিতে হবে না। তবে দ্বিতীয় বছর থেকে ৩৪৫(ভ্যাটসহ) টাকা দিতে হবে।
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের যে কোন এটিএম বুথ থেকে সকল ধরনের টাকা লেনদেন চার্জ প্রযোজ্য নয়।

 

আরো পড়ুন

ডাচ বাংলা ব্যাংক স্টুডেন্ট ব্যাংকিং একাউন্ট এর বিস্তারিত

এটিএম কার্ড হারিয়ে গেলে

এটিএম কার্ড হারিয়ে গেলে আপনাকে আপনার এজেন্ট পয়েন্টে গিয়ে পুনরায় এটিএম কার্ড সংযোজন করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমান চার্জ দিতে হতে পারে।

যেভাবে একাউন্টে টাকা জমা রাখবেন

আপনি আপনার এজেন্ট ব্যাংকিং একাউন্টে টাকা জমা রাখার জন্য নির্দিষ্ট এজেন্ট আউটলেট ফাস্টট্রাক এবং ডাচ বাংলা ব্যাংকের মূল ব্রাঞ্চে গিয়ে টাকা জমা রাখতে পারবেন।

এজেন্টের কাছ থেকে যেভাবে টাকা জমা রাখবেন

এজেন্টের কাছ থেকে টাকা জমা রাখার জন্য নির্দিষ্ট এজেন্ট পয়েন্টে গিয়ে প্রথমে আপনি আপনার বায়োমেট্রিক অ্যাকাউন্ট নাম্বারটি এজেন্টকে বলবেন। তারপরে টাকা জমা দিবেন এবং টাকার পরিমাণ বলবেন। টাকা জমা হওয়ার পরে এজেন্ট আপনাকে একটি রশিদ দিবে। এবং আপনার ফোন নাম্বার একটি কনফারমেশন মেসেজ আসবে।

ফাস্ট ট্রাক থেকে যেভাবে টাকা জমা রাখবেন

ফাস্ট ট্রাক থেকে টাকা জমা দিতে হলে আপনাকে যেকোন একটি ফাস্ট ট্র্যাকে যেতে হবে । প্রথমে ফাস্টট্রাক অফিসারের কাছে আপনি আপনার বায়োমেট্রিক অ্যাকাউন্ট নম্বরটি বলবেন এবং টাকা জমা দিবেন। গ্রাহকের টাকা বুঝে নেওয়ার পর ফাস্টট্রাক অফিসার একটি খামের মধ্যে টাকা ভরবেন এবং খামটির মুখ বন্ধ করে খামটির উপড়ে স্বাক্ষর দিবেন এবং গ্রাহকের স্বাক্ষর নিবেন।
ফাস্টট্রাক অফিসার তারপরে খামটি মেশিনের প্রবেশ করাবেন। তারপরে মেশিন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি রশিদ বেরিয়ে আসবে। টাকা জমা হওয়ার সাথে সাথে গ্রাহকের মোবাইল নাম্বারে একটি কনফারমেশন মেসেজ চলে আসবে।

এজেন্ট পয়েন্ট থেকে যেভাবে টাকা উত্তোলন করবেন

এজেন্ট পয়েন্ট থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য প্রথমে নির্দিষ্ট এজেন্ট পয়েন্টে গিয়ে এজেন্টের কাছে বায়োমেট্রিক অ্যাকাউন্ট নাম্বারটি বলতে হবে। তারপরে এজেন্ট আপনার বায়োমেট্রিক আঙ্গুলের ছাপ নেয়ার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়ার পরে টাকার অ্যামাউন্ট জানতে চাইবে এবং সেটা বলার সাথে সাথে আপনাকে টাকা দিয়ে দিবে। এবং সঙ্গে সঙ্গে আপনার মোবাইলে টাকা উত্তোলনের একটি কনফার্মেশন মেসেজ চলে আসবে।

যেভাবে ব্যাংক শাখা থেকে টাকা উত্তোলন করবেন

ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য প্রথমে ব্যাংক কর্মকর্তার নিকট বায়োমেট্রিক অ্যাকাউন্ট নাম্বার এবং টাকার পরিমাণ বলতে হবে। তারপরে ব্যাংক অফিসার গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট নাম্বার এবং আঙ্গুলের ছাপ বায়োমেট্রিক মেশিন এর প্রবেশ করিয়ে শনাক্ত করবেন। সনাক্ত করার পরে ব্যাংক অফিসার গ্রাহককে টাকা বুঝিয়ে দিবেন। এবং তারপরে সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকের মোবাইল নাম্বার একটি কনফারমেশন মেসেজ চলে আসবে।

এটিএম কার্ড থেকে যেভাবে টাকা উত্তোলন করবেন

এটিএম কার্ড থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য নির্দিষ্ট এটিএম বুথে গিয়ে এটিএম মেশিনে এটিএম কার্ড টি প্রবেশ করানোর পরে। আপনি আপনার চার ডিজিটের পিন নাম্বারটি দিবেন। তারপরে নগদ উত্তোলন অপশন থেকে টাকার পরিমান লিখে কনফার্ম করবেন। তারপর সাথে সাথে আপনি আপনার অর্থ পেয়ে যাবেন।

এজেন্ট ব্যাংকিং একাউন্টে বিদেশ থেকে যেভাবে রেমিটেন্স পাঠাবেন

বিদেশে অবস্থিত যেকোনো ব্যাংকের এক্সেঞ্জ হাউজ থেকে আপনি টাকা পাঠাতে পারবেন। এজন্য এক্সচেঞ্জ হাউজ এগিয়ে গ্রহীতার নাম ব্যাংকের নাম এবং গ্রহীতার বায়োমেট্রিক অ্যাকাউন্ট নাম্বারটি এবং টাকা দিবেন। টাকা দেওয়ার সাথে সাথে ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রহীতার একাউন্টে জমা হয়ে যাবে।

বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিটেন্স যেভাবে উত্তোলন করবেন

একাউন্টে টাকা জমা হওয়ার সাথে সাথে গ্রহীতার মোবাইলে একটি এসএমএস পাবে। তারপর গ্রহীতা যেকোন এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট থেকে তার অর্থ উত্তোলন করতে পারবে।

এজেন্ট ব্যাংকিং একাউন্ট এর মাধ্যেমে

এছাড়াও আপনি বায়োমেট্রিক ডিপোজিট প্লাস স্কিম ডিপিএস করতে পারবেন।
বায়োমেট্রিক ফিক্স ডিপোজিট রিসিপ্ট। এফডিআর করতে পারবেন।

বায়োমেট্রিক এজেন্ট ব্যাংকিং সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে ডায়াল করুন 16216।
অথবা নির্দিষ্ট কোন শাখায় যোগাযোগ করুন।

আর্টিকেলটি কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন
ব্যাংকিং বিষয় নিয় নিত্য নতুন আরও পোস্ট পেতে অবশ্যই প্রতিদিন আমাদের সাইটটি ভিজিট করবেন।
আল্লাহ হাফেজ।

যুক্ত হন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেল